Communication System

সঞ্চার ব্যবস্থা 


WBCHSE SYLLABUS

1) সঞ্চার ব্যবস্থা বা সঞ্চালন ব্যবস্থা কাকে বলে?

কোন তথ্য সংকেত বা বার্তা কে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাঠাতে যেসব যন্ত্রপাতি এবং মাধ্যমের প্রয়োজন হয় তাদেরকে একত্রে সঞ্চার ব্যবস্থা বা যোগাযোগ ব্যবস্থা বলা হয় ।

একটি যোগাযোগ ব্যবস্থার তিনটি মূল অংশ থাকে। 

a) প্রেরক যন্ত্র বা ট্রান্সমিটার

 b)সঞ্চার মাধ্যম বা চ্যানেল

 c) গ্রাহক যন্ত্র। 

 2 )সম্প্রচার মাধ্যম কাকে বলে? 

সম্প্রচার ব্যবস্থায় সংকেত প্রেরক ও গ্রাহকের মধ্যে সংযোগকারী মাধ্যম যার মধ্যে দিয়ে বার্তা সংকেত বিস্তার লাভ করে তাকে সঞ্চার মাধ্যম বলা হয় ।

3)প্রেরক যন্ত্র কাকে বলে ?

যে যান্ত্রিক ব্যবস্থার সাহায্যে তথ্য সংকেতকে উপযুক্ত সঞ্চার মাধ্যমের  মধ্য  দিয়ে প্রেরণ করা হয়  তাকে প্রেরক যন্ত্র বলা হয়। 

4)গ্রাহক যন্ত্রকাকে বলে ?

 যে যান্ত্রিক ব্যবস্থা  সম্প্রচার মাধ্যমের মধ্য দিয়ে প্রেরিত বার্তা সংকেতকে গ্রহণ করে এবং এর থেকে মূল বার্তা পুনর্গঠন করে তাকে গ্রাহক যন্ত্র বলা হয়।

5)রিপিটার কাকে বলে ?

প্রেরক ,গ্রাহক এবং বিবর্ধক যন্ত্র সমন্বিত যে ব্যবস্থার মাধ্যমে শক্তির ক্ষয়ের ফলে ক্ষীন হয়ে যাওয়া সংকেতকে পুনরুজ্জীবিত করে এবং সম্প্রচারের সাহায্য করে তাকে  তাকে পুনর সম্প্রচারক বা রিপিটার বলা হয় ।মহাকাশ যোগাযোগ ব্যবস্থায় উপগ্রহের স্থাপিত যন্ত্র গুলি  পুনঃসম্প্রচারক যন্ত্রের ভূমিকা পালন করে।

6)ট্রান্সডিউসার কাকে বলে ? 

যে যান্ত্রিক ব্যবস্থার সাহায্যে সাধারণ বার্তা কে তড়িৎ সংকেতের রূপান্তরিত করা যায় বা তড়িৎ সংকেতকে সাধারণ সংকেতে রূপান্তর করা যায়, সেই যান্ত্রিক ব্যস্থাকে ট্রান্সডিউসার বলা হয়ট্রান্সডিউসার  এর সাহায্যে শক্তিকে এক রুপ  থেকে অন্যরূপে রূপান্তরিত করা যায়। 

যেমন মাইক্রোফোন হল একটি ট্রান্সডিউসার।  এর সাহায্যে শব্দ সংকেত (যান্ত্রিক তরঙ্গ) কে বৈদ্যুতিক সংকেত বা বৈদ্যুতিক তরঙ্গের রূপান্তর করা হয়।আলোক সংকেত কে তড়িৎ সংকেতে রূপান্তরিত করা হয় ফটো ডিটেক্টর এর সাহায্যে।



7)সংকেত পটি প্রস্থ বা সম্প্রচার পটি বলতে  কী  বোঝ?

সঞ্চার ব্যবস্থায় ব্যবহৃত সংকেত সাধারণত একক কম্পাঙ্ক যুক্ত তরঙ্গ না হয়ে নির্দিষ্ট পাল্লার মধ্যে অবস্থিত একাধিক বিভিন্ন কম্পাঙ্ক যুক্ত তরঙ্গের উপরি পাতনের ফলে সৃষ্ট লব্ধী তরঙ্গ হিসাবে অবস্থান করে ।কম্পাঙ্কের ওই পাল্লাকে সম্প্রচার পটি বা সংকেত পটি প্রস্থ বলা হয়। 

8)বাহক তরঙ্গ কাকে বলে? বাহক তরঙ্গের গুরুত্ব লেখো। 

দূর সঞ্চার ব্যবস্থায় কোন তথ্য সংকেতকে প্রেরক থেকে গ্রাহক পর্যন্ত পাঠানোর জন্য সংকেত তরঙ্গের তুলনায় অনেক গুণ উচ্চ কম্পাঙ্কের তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের সাহায্য নেওয়া হয়। এই উচ্চ কম্পাঙ্কের তরঙ্গ কে বাহক তরঙ্গ বলা হয়।

বাহক তরঙ্গের গুরুত্ব

সাধারণ বার্তা সংকেতের কম্পাঙ্ক খুব কম হয়। ফলে সরাসরি এই  সংকেত প্রেরণের জন্য  প্রেরক অ্যান্টেনার দৈর্ঘ্য অনেক বড় হওয়ার প্রয়োজন হয়। এই ধরনের বড় এন্টেনা তৈরি এবং তার ব্যবহার খুবই অসুবিধা জনক হয় ।অপরদিকে উচ্চ কম্পাঙ্কের বাহক তরঙ্গ ব্যবহার করার ফলে  প্রেরক এন্টেনার দৈর্ঘ্য অনেক কম হয়,যেটি তৈরি ও ব্যবহার সুবিধাজনক হয় ।এছাড়া বিভিন্ন প্রেরণ কেন্দ্র থেকে একই কম্পাঙ্কের বার্তা সংকেত প্রেরণ করলে তাদের পৃথকভাবে গ্রহণ করা সম্ভবত হয় না ফলে সংকেত অস্পষ্ট হয় ।অপরদিকে বিভিন্ন প্রেরক কেন্দ্রগুলি ভিন্ন মানের উচ্চ কম্পাঙ্কের বাহক তরঙ্গ ব্যবহার করার ফলে কেন্দ্র গুলির কম্পাঙ্কের মধ্যে অনেক বেশি পার্থক্য থাকে এবং সংকেত গুলিকে স্পষ্ট ভাবে আলাদা করে গ্রহণ করা সম্ভব হয়।

9)i)এন্টেনা কি ?এর প্রকারভেদ গুলি লেখ।

 এরিয়াল বা এন্টেনা হল এক বা একাধিক পরিবাহী ধারা গঠিত একটি বিশেষ ব্যবস্থা যেটি তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ বিকিরণ ও গ্রহণ করতে পারে।

 এন্টেনা দুই প্রকার  1)প্রেরক এন্টেনা 2) গ্রাহক অ্যান্টেনা। 

 ii)অ্যান্টেনার উপযোগিতা লেখ

অ্যান্টেনা তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ বিকিরণ সম্প্রচার এবং গ্রহণ করতে সাহায্য করে। প্রেরক এন্টেনা তড়িৎ শক্তিকে তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গের রূপান্তরিত করে সম্প্রচার করে। অপরদিকে গ্রাহক অ্যান্টেনা তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গকে গ্রহণ করে তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করে।

10)সংকেত  পটি প্রস্থ বলতে কী বোঝ?

 সঞ্চার ব্যবস্থায় ব্যবহৃত কোন সংকেত যে কম্পাঙ্ক পাল্লার মধ্যে কাজ করে তাকে ওই সংকেতের পটিপ্রস্থ   বলা হয় ।আবার ওই ব্যবস্থায় ব্যবহৃত কোন যন্ত্র যে কম্পাঙ্ক পাল্লার মধ্যে কাজ করে তাকে ওই যন্ত্রের কম্পাঙ্কের পটিপ্রস্থ বলা হয়।

বিরুপন

1.বিরুপন বা মডুলেশন কি? 

যে পদ্ধতির সাহায্যে উচ্চ কম্পাঙ্কের বাহক তরঙ্গের সাথে নিম্ন কম্পাঙ্কের তথ্য সংকেত কে আরোপিত করে সঞ্চার ব্যবস্থার মাধ্যমে সম্প্রচারের উপযোগী করা হয় তাকে মডুলেশন বলা হয়।

2.বিরূপনের প্রয়োজনীয়তা কি ?

বিরূপণ ঘটানোর কয়েকটি কারন নিচে উল্লেখ করা হল 

i)সাধারণভাবে বার্তা সংকেতের কম্পাঙ্ক খুব কম হয় ।এটি সরাসরি প্রচারের জন্য শক্তি ক্ষয় বেশি হয়ফলে বেশি দূর পর্যন্ত সম্প্রচার করা সম্ভব হয় না ।অপরদিকে  উচ্চ কম্পাঙ্কের বাহক তরঙ্গের সাথে বার্তা সংকেতকে আরোপিত করে যে বিরূপিত  তরঙ্গ পাওয়া যায় তা বহুদূর পর্যন্ত সম্প্রচার করা যায় । 

ii)কেবলমাত্র সংকেত প্রেরণের জন্য গ্রাহক ও প্রেরক এন্টেনার দীর্ঘ অনেক বড় হওয়ার প্রয়োজন হয় যা তৈরি করা ও ব্যবহার করা খুবই অসুবিধা জনক। কিন্তু উচ্চ বাহক তরঙ্গ ব্যবহার করে বিরূপিত তরঙ্গ ব্যবহার করা হলে এন্টেনার দৈর্ঘ্য ছোট হয় যা ব্যবহার ও গঠন তৈরি করা সুবিধাজনক হয়।

iii)বিভিন্ন প্রচার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত সংকেতের কম্পাঙ্ক সমান হলে ওই কেন্দ্রগুলিকে পৃথকভাবে ধরা সম্ভব হয় না ।তাই প্রতিটি প্রচারকেন্দ্র একটি সুনির্দিষ্ট বাহক তরঙ্গ ব্যবহার করে। প্রেরণ কেন্দ্রগুলির বাহক তরঙ্গের কম্পাঙ্কের পার্থক্য যত বেশি হয় ওই কেন্দ্রগুলিকে পৃথকভাবে নির্বাচন করতে তত সুবিধা হয়।

বিরূপনাঙ্ক কাকে  বলে?

বিস্তার বিরূপিত তরঙ্গে বাহক তরঙ্গের বিস্তার বিরূপক  তরঙ্গ  দ্বারা কী মাত্রায় পরিবর্তিত হয় তা যে  মাত্রাহীন ধ্রুবকের  দ্বারা পরিমান গতভাবে নির্ধারণ করা যায় তাকে  বিরূপান সূচক বা বিরুপন্যান্কা বলা হয়.

মডুলেশন সূচকের গুরুত্ব  লেখ। 

মডুলেশন সূচক বাহক তরঙ্গের মডুলেশন এর মাত্রা কে নির্দেশ করে 

i) মডুলেশন সূচকের মান কম হলে বাহক তরঙ্গের বিস্তারের পরিবর্তন স্বল্প হয়। প্রচারিত সংকেত যথেষ্ট শক্তিশালী হয় না

ii) মডুলেশন সূচকের মান বেশি হলে  বিরূপনের মাত্রা বেশি হয় প্রচারিত সংকেত যথেষ্ট স্পষ্ট হয়।

iii) এই সূচকের মান এক অপেক্ষা বেশি হলে তরঙ্গ অতি বিরূপিত হয় প্রচারিত তরঙ্গে বিকৃতি সৃষ্টি হয়

মডিউলেশন সূচকের মান এক অপেক্ষা কম রাখা হয় কেন ?

মডুলেশন সূচকের মান এক অপেক্ষা বেশি হলে বাহক তরঙ্গে অতি বিরুপনের ঘটনা ঘটে। সঞ্চারিত তরঙ্গে মাঝে মাঝে তথ্য সংকেত অনুপস্থিত থাকে ।এই ক্ষেত্রে তরঙ্গ গ্রহণকালে বিকৃতির সৃষ্টি হয় ।এই বিকৃতি দূর মুক্ত হওয়ার জন্য মডিউলেশন সূচকের মান এক অপেক্ষা কম রাখা হয়

3.বিরুপণের প্রকারভেদ

 বিরূপণ কে প্রাথমিকভাবে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। i  )বিস্তার বিরূপণ ii )কৌণিক বিরূপণ ।

আবার কৌণিক বিরূপণকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়।  i ) কম্পাঙ্ক বিরূপণ ii )দশা বিরুপণ।

4.বিস্তার বিরূপণ 

যে প্রক্রিয়ায় বাহক তরঙ্গের উপর তথ্য সংকেতকে আরোপিত করা হলে কম্পাঙ্ক  অপরিবর্তিত থাকে কেবলমাত্র বিস্তারের পর্যায়বৃত্ত পরিবর্তন ঘটে সেই প্রক্রিয়াকে বিস্তার বিরুুপন বলা হয়।

লেখচিত্রের সাহায্যে বিস্তার  বিরূপণ 
5.কম্পাঙ্ক বিরুপণ

যে প্রক্রিয়ায় বাহক তরঙ্গের উপর তথ্য তরঙ্গ আরোপিত করা হলে বিস্তার অপরিবর্তিত থাকে কিন্তু শুধুমাত্র কম্পাঙ্কের পর্যায়বৃত্ত পরিবর্তন ঘটে সেই প্রক্রিয়াকে কম্পাঙ্ক বিরুপণ বলা হয়।

লেখচিত্রের সাহায্যে কম্পাঙ্ক বিরূপণ 



মডেম

1.মডেম কাকে বলে? 

যে যন্ত্রের সাহায্যে ডিজিটাল সংকেত কে অ্যানালগ সংকেতে এবং অ্যানালগ সংকেতকে ডিজিটাল সংকেতে রূপান্তর করা যায় তাকে মডেম বলে ।Modulator এবং Demodulator শব্দ দুটির সমন্বয়ে Modem শব্দটি গঠিত হয়েছে।

2.মডেম এর ব্যবহার 

1)একটি কম্পিউটারের সাথে অন্য কম্পিউটারের তথ্য আদান-প্রদানের জন্য মডেম ব্যবহার করা হয়। 2)টেলিফোন যোগাযোগ ব্যবস্থায় মডেম ব্যবহার করা হয়। 

3.ভিন্ন ভিন্ন কোন পদ্ধতিতে প্রেরক এন্টেনা থেকে গ্রাহক অ্যান্টেনার দিকে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ প্রবাহিত হয় তা বিবৃত কর।

প্রেরক অ্যান্টেনা  থেকে গ্রাহক  এন্টেনার দিকে তরঙ্গ বিস্তার লাভের পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে সঞ্চারিত বেতার তরঙ্গ কে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয় । 

a) পৃষ্ঠতরঙ্গ বা ভূমি তরঙ্গ b) দেশতরঙ্গ c) আকাশ তরঙ্গ বা নভো তরঙ্গ

পৃষ্ঠতরঙ্গ বা ভূমি তরঙ্গ

 i)পৃষ্ঠতরঙ্গ বা ভূমি তরঙ্গ কাকে বলে?

যে ধরনের বেতার তরঙ্গ ভূপৃষ্ঠের বক্রতাকে অনুসরণ করে বিস্তার লাভ করে তাকে পৃষ্ঠতরঙ্গ বা ভূমি তরঙ্গ বলা হয় ।এক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠ ও অয়নমন্ডল উভয়ই প্রতিফলক হিসেবে কাজ করে। এই দুই স্তরের মধ্যে বারবার প্রতিফলনের ফলে তরঙ্গ সামনের দিকে এগিয়ে যায় ।

ii)পৃষ্ঠ তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ।

1) ভূপৃষ্ঠ ও আয়ন মন্ডলের নিচে স্তরে বারবার প্রতিফলনের মধ্য দিয়ে এই তরঙ্গ  বিস্তার  লাভ  করে। 2)ভূপৃষ্ঠে স্বল্প দূরত্বের পাল্লার মধ্যে সম্প্রচারিত হতে পারে। 

3)VLF(30 KHz-300kHz)ও LF(300kHz-3MHz) কম্পাঙ্কের বাহক তরঙ্গের সঞ্চারের ক্ষেত্রে এই তরঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।

4)উচ্চ কম্পাঙ্কের বাহক তরঙ্গের ক্ষেত্রে তরঙ্গের শক্তি দ্রুত ভূমি দ্বারা শোষিত হয়। ফলে দীর্ঘ দূরত্বে যোগাযোগ সম্ভব হয় না । 

দেশ তরঙ্গ

 1.দেশ তরঙ্গ কাকে বলে?

যে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ প্রেরক অ্যান্টেনা থেকে সরলরেখায় গতিশীল হয়ে সরাসরি বা ভূপৃষ্ঠে প্রতিফলিত হয়ে গ্রাহক অ্যান্টেনায়  পৌঁছায় সেই তরঙ্গ কে দেশ তরঙ্গ বলা হয়।

2.উপগ্রহ সঞ্চার বলতে কী বোঝো?

 দেশ তরঙ্গ অতিদুর সঞ্চারের জন্য একের পর এক এন্টেনার ব্যবহারের পরিবর্তে পৃথিবীর চারিদিকে বিভিন্ন কক্ষপথে স্থাপিত কৃত্রিম উপগ্রহগুলিকে কাজে লাগানো হয় ।ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রেরিত দেশ তরঙ্গ কৃত্রিম উপগ্রহ দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে ভূপৃষ্ঠের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে ।এই ব্যবস্থাকে কে উপগ্রহ সঞ্চার বা কৃত্রিম উপগ্রহ মারফত সঞ্চার বলা হয় ।

এই ব্যবস্থায় মুখ্যত উচ্চ কম্পাঙ্ক যুক্ত অনুতরঙ্গ (300MHz -300GHz)ব্যবহার করা হয়। এজন্য একে অনুতরঙ্গ (Micro wave Communication)সঞ্চার বলা হয়।

3.বেতার দিগন্ত কি ?

দেশ তরঙ্গ বায়ুমন্ডলের মধ্য দিয়ে সরলরৈখিক পথে প্রায় বিনা বিচ্যুতিতে বিস্তার লাভ করতে পারে ।ভূপৃষ্ঠের বক্রতার জন্য অ্যান্টেনার উপর নির্ভর করে ভূপৃষ্ঠে এই তরঙ্গ সঞ্চারের একটি নির্দিষ্ট সীমা থাকে ।এই সীমাকে ওই অ্যান্টেনার বেতার দিগন্ত বলা হয়।

4.বেতার দিগন্তের রাশি 

মনে করি, পৃথিবীর ব্যাসার্ধ R ।পৃথিবীপৃষ্ঠের P  বিন্দুতে PA = H উচ্চতার একটি অ্যান্টেনার সাহায্যে বেতার তরঙ্গ সম্প্রচার ঘটানো হচ্ছে । তরঙ্গ সর্বাধিক O  বিন্দু পর্যন্ত যেতে পারে। PO হল অ্ন্টেনাটির  বেতার দিগন্ত।

চিত্র থেকে লেখা যায় ,

                         এখন
                                   

খুব ক্ষুদ্র হওয়ায় 
                        

        বেতার দিগন্ত 
                           
গ্রাহক এন্টেনা QB এর বেতার দিগন্ত
 এটি হিসাবে ধরা হলে বেতার দিগন্ত   
 


আকাশ তরঙ্গ

1.আকাশ তরঙ্গ বলতে কি বোঝ ?

মহাকাশ অভিমুখে প্রেরিত যে বেতার তরঙ্গকে আয়ন মন্ডলে প্রতিফলন ঘটিয়ে ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত কোন স্থানে পাঠানো সম্ভব হয় তাকে আকাশ তরঙ্গ বা sky wave বলা হয় ।

2.আকাশ তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য 

1) আকাশ তরঙ্গ হিসেবে মাঝারি কম্পাঙ্ক(MF) এবং উচ্চ কম্পাঙ্কের(HF) নিচের দিকের কম্পাঙ্ক সম্পন্ন বাহক তরঙ্গগুলি সাধারণত আকাশ তরঙ্গ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

 2) আকাশ তরঙ্গ বিস্তারে আয়ন মন্ডল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।  উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে আয়ন মন্ডল এর ঘনত্ব বৃদ্ধি পায় ।ফলে অয়নমন্ডলের প্রতিসরাঙ্ক


 এর মান ক্রমশ কমতে থাকে।(N= ওই স্তরে ইলেক্ট্রনের সংখ্যা ঘনত্ব ,f= আকাশ তরঙ্গের কম্পাঙ্ক)
 উর্ধ্বগামী বেতার তরঙ্গ আয়ন মন্ডল এর উপরের স্তরে অভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলনের ফলে ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। 

 3.দিনের বেলা তুলনায় রাত্রিবেলা নভোতরঙ্গ প্রেরিত সংকেত স্পষ্ট ও তীব্র হয় কেন?

সৌর বিকিরণ বা মহাজাগতিক বিকিরণ আয়ন মন্ডল এর ওপর স্তরে এসে পড়ে ।ফলে আয়ন মন্ডল এর উপরের স্তরে আয়নীভবনের মাত্রা বেশি হয় ।এই মাত্রার তারতম্য অনুসারে আয়ন মন্ডলকে উচ্চস্তর ,মধ্যস্তর ও নিম্নস্তর এই তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়। উচ্চ স্তরে আয়নীভবনের মাত্রা সর্বাধিক ।উচ্চ কম্পাঙ্কের নভোতরঙ্গ উচ্চ স্তরে প্রতিফলিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে ।এক্ষেত্রে মধ্যস্তর ও নিম্ন স্তরে তরঙ্গ কিছু মাত্রায় শোষিত হয় ।দিনের বেলা এই তিনটি স্তরের অস্তিত্ব থাকলেও রাত্রিবেলা মধ্যস্তর ও নিম্নস্তর প্রায় অবলুপ্ত হয়ে যায় ।ফলে শোষণের পরিমাণ খুব কম হয়। তাই রাত্রিবেলা নভোতরঙ্গ বাহিত সংকেত স্পষ্ট ও তীব্র হয়।